ইবাদত সালাতইসলাম শিক্ষা

কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম

কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম

Rate this post

কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম

কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম কোরবানির নিয়ম কানুন ইসলামি ফিকহের পরিভাষায় কোরবানি হলো জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে শরিয়তের বিধান অনুসারে নির্দিষ্ট পশু জবাই করা।

ইসলামি ফিকহের পরিভাষায় কোরবানি হলো জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে শরিয়তের বিধান অনুসারে নির্দিষ্ট পশু জবাই করা। আসুন জেনে নেই কোরবানির যত নিয়ম কানুন রয়েছে সেগুলো।

কোরবানির পশুর বয়স :

কোরবানির জন্য ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার বয়স এক বছর হতে হয়; গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর এবং উটের বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। দুম্বার এক বছর পূর্ণ না হলেও যদি এক বছরের মতো হৃষ্টপুষ্ট হয় তাহলে চলবে। উল্লিখিত পশুগুলো নর-মাদি যা-ই হোক না, তা দ্বারা কোরবানি হবে। কোরবানির পশু তরতাজা ও হৃষ্টপুষ্ট হওয়া উত্তম। কোনো খুঁত থাকলে সে পশু দ্বারা কোরবানি আদায় হবে না। যেমন: লেজের বা কানের বেশির ভাগ অংশ কাটা থাকা, অন্ধ বা এক চোখ কানা হওয়া, এক পা খুঁড়িয়ে চলা বা চলনশক্তিহীন হওয়া, উভয় শিং বা কোনো এক শিং মূল থেকে উত্পাটিত হওয়া। অর্থাৎ এমন কোনো খুঁত বা অপূর্ণতা, যার দ্বারা এটির উপযোগিতা কমে যায় ও মূল্য হ্রাস পায়।

কোরবানির মাংস ও ভাগের শরিয়তসম্মত নিয়ম:

কোরবানির মাংস তিনভাগে ভাগ করে এর একভাগ গরীব ও ইয়াতিম-মিসকিনদের দান করা, একভাগ আত্মীয়-স্বজনকে দেয়া এবং অন্য ভাগ নিজে রাখা মুস্তাহাব। তবে ইচ্ছা করলে আপনি পুরো মাংসই খেতে পারেন এতে দোষের কিছু হবে না। কোরবানির পশু যবেহকারী ও মাংস প্রস্তুতকারীকে কোরবানির পশুর মাংস থেকে পারিশ্রমিক স্বরূপ দেয়া যাবে না।

চামড়া: কোরবানির পশুর চামড়া, রশি ও ফুলের মালা প্রভৃতি সদকা করে দিতে হবে। চামড়া নিজের ব্যবহারের জন্য রাখতে চাইলে রাখতে পারবে, যেমন- জায়নামায, বিছানা, ইত্যাদি বানাতে পারবে। কিন্তু কোরবানির চামড়া বিক্রি করে এর মূল্য নিজ কর্মে ব্যয় করতে পারবে না।

কোরবানির ঈদ কত তারিখে 2022 – ঈদুল আজহার কুরবানি

সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞান ২০২২ – সাধারন জ্ঞান – কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য -প্রশ্ন ও উত্তর

২০২০ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে

মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি:

যদি মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি দেয়া হয়, তাহলে মাংস উপরোল্লিখিত নিয়মে বন্টন করা উত্তম।

কোরবানির পশু জবেহ করার নিয়ম:

জবেহ করার নিয়ম জানা থাকলে কোরবানির পশু নিজ হাতে জবেহ করা মুস্তাহাব। যদি নিজে করতে না পারেন তাহলে অন্যের দ্বারা তা সমাধা করা যাবে। তবে জবেহ্’র সময় নিজে সামনে থাকা উত্তম। জবেহ্’র সময় নিম্ন লিখিত রগসমূহ কাটার ব্যাপারে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবেঃ

(ক) শ্বাসনালী

(খ) খাদ্যনালী এবং

(গ) রক্ত চলাচলের নালীদ্বয়।

 

বক্ষস্থল হতে গলদেশের মধ্যবর্তী কোন স্থানে জবেহ করা বাঞ্চনীয়। জবেহ’র পূর্বে ছুরি খুব ধারালো করে নিতে হবে। তারপর কোরবানির পশুর মাথা দক্ষিণ এবং পেছনের দিক উত্তর দিকে রেখে কেবলামুখী করে শায়িত করে দোয়া পড়বেন।

দোয়া: “ইন্নী ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহিয়া লিল্লাজি ফাত্বারাস সামাওয়াতী ওয়াল আরদা হানীফাঁও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন, ইন্না সালাতী ওয়ানুসুকী ওয়া মাহ্য়ায়া ওয়ামামা-তী লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়ালাকা বিস্মিল্লাহি আল্লাহু আকবর” বলে কোরবানির পশু জবেহ করার পর পাঠ করবেন- “আল্লাহুম্মা তাক্বাব্বাল মিন্নী (অংশীদার থাকলে- ‘ওয়া মিন’ বলার পর প্রত্যেকের নাম ও বাপের নাম বলবেন) কামা তাক্বাব্বালতা মিন খলীলিকা ইব্রাহীমা আলাইহিস্ সালাম ওয়া হাবীবিকা মুহাম্মদিনিল্ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।”

কোরবানি দিবসে করণীয়:

হাদীস শরীফ: হুজূর আক্বদাস (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদুল ফিত্বরের দিন মিষ্টি জাতীয় কিছু আহার করে ঈদগাহে তাশরিফ নিয়ে যেতেন, কিন্তু ঈদুল আযহার দিবসে নামায আদায় না করা পর্যন্ত কিছুই আহার করতেন না। -[তিরমিজী, দারেমী ও ইবনে মাজাহ]

আকিকা:

অনেককেই কোরবানির সাথে আকিকাও আদায় করতে দেখা যায়। আকিকা ছেলে সন্তান হলে কোরবানির পশুতে দুই অংশ আর মেয়ে সন্তান হলে এক অংশ। আকিকার অংশ পিতা-মাতা, দাদা-দাদী সবাই খেতে পারবে; কোন অসুবিধা নেই। আকিকার চামড়ার হুকূম কোরবানির চামড়ার হুকুমের আওতায় পড়বে।

যাদের ওপর কুরবানি ওয়াজিব:

কুরবানি আল্লাহর প্রেমের নির্দশন। যুগে যুগে আল্লাহ প্রত্যেক আম্বিয়া কেরামগণের ওপরেই এই দায়িত্ব ন্যস্ত করেছেন। যার ধারাবাহিকতা এখনও প্রবাহমান। আল্লাহ সামর্থ্যবান মুসলমান আকিল, বালিগ, মুকিম পুরুষ ও নারীর ওপর কুরবানি করাকে ওয়াজিব করেছেন। যাদের ওপর কুরবানি ওয়াজিব তা তুলে ধরা হলো-

যারা কুরবানি করবেন-

১. কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য নেসাব পরিমাণ মাল পূর্ণ এক বছর থাকা জরুরি নয়। অর্থাৎ যে ব্যক্তি ১০ জিলহজ্ব ফজর হতে ১২ জিলহজ্ব সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকবে, তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব।

২. পারিবারিক ব্যয় নির্বাহের জন্য যে পরিমাণ জমি বা ফসলের দরকার তা থেকে অতিরিক্ত জমি বা ফসলের মূল্য অথবা যে কোনো একটির মূল্য যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মূল্যের সমান হয়। তাহলেও কুরবানি ওয়াজিব।

৩. পরিবারের সব সদস্যের যদি আলাদা-আলাদাভাবে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়, তবে সবার ওপর আলাদাভাবেই কুরবানি ওয়াজিব।

৪. গরিব ব্যক্তি যদি কুরবানির নিয়্যাতে গরুক ক্রয় করে তবে তার ওপরও কুরবানি ওয়াজিব।

৫. উদ্দেশ্য হাসিলে কুরবানির মান্নত করলে সে উদ্দেশ্য পূর্ণ হলেও কুরবানি করা ওয়াজিব।

৬. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যত সম্পদের অধিকারী হোক না কেন তার ওপর একটি কুরবানিই ওয়াজিব। সম্পদ বেশি বলে একাধিক কুরবানি করতে হবে এমন কোনো বিধান নেই। অবশ্য একাধিক কুরবানি করলে অনেক ছাওয়াব লাভ হয়।

কোরবানির নিয়ম কানুন
কোরবানির নিয়ম কানুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker