LifestyleBangla Health Tips | বাংলা স্বাস্থ্য টিপস

স্মার্টফোনের আসক্তি দূর করবেন যেভাবে

Rate this post

করোনাভাইরাস নিত্যজীবনে প্রভাব ফেলেছে। অনেকের সঙ্গী এখন আইপ্যাড, ই-বুক, ল্যাপটপ অথবা ডেস্কটপ। হাতে হাতে স্মার্টফোন তো রয়েছেই। বেশিরভাগ সময় ভার্চুয়াল জগতে বিচরণ বেড়ে গেছে মানুষের। অনেকে স্মার্টফোনে নাটক-সিনেমা, ওয়েব সিরিজও দেখেন। আবার কেউ অনলাইন গেমস-এ মেতেছেন। অর্থাৎ দিনের অধিকাংশ সময় স্মার্টফোনের পর্দায় কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষার্থী থেকে পেশাজীবী সবাই।

এখন আর বিষয়টি অজানা নয় যে, স্মার্টফোনে স্ক্রিন টাইম বেড়ে গেলে শারীরিক এবং মানসিক ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। সংসার হতে পারে প্রেমশূন্য, বাড়তে পারে অশান্তি। বিশেষ করে শিশুদের স্মার্টফোনে গেম খেলার অভ্যাস ডেকে আনে অন্য বিপদ। গেমের মতো মজার দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকার পর পড়াশোনার মতো নীরস বিষয়ে আগ্রহ কমে যেতে পারে। এছাড়া গেম খেলার সময় মন এতো একাগ্র থাকে যে চোখের পলক পড়া কমে যায়। তাই অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, দিনে স্ক্রিন টাইম দুই ঘণ্টার বেশি যেন না হয়।

যদি ইতোমধ্যেই স্মার্টফোনের ক্লান্তি, স্ট্রেস বা চাপে অভ্যস্ত হয়ে থাকেন তাহলে হঠাৎ করে এখনই বন্ধ করতে পারবেন না। কিন্তু সময়টা যাতে কমিয়ে আনা যায় সে চেষ্টা করা যেতে পারে। যেমন, বিশ মিনিট অন্তর মনিটর থেকে চোখ সরিয়ে বিশ ফুট দূরের কোনো বস্তুর দিকে বিশ সেকেন্ড তাকিয়ে থাকুন এবং বিশবার চোখ পিটপিট করুন। এতে চোখে চাপ কম পড়ে। গদি আঁটা চেয়ারে সোজা হয়ে বসতে হবে। পা যেনো মাটিতে পৌঁছায়। এতে ঘাড়ে ও কোমরে চাপ কম পড়বে। চোখের ক্ষতি কমাতে ল্যাপটপ, টিভি, স্মার্টফোনের উজ্জ্বলতা ও কন্ট্রাস্ট কমিয়ে রাখতে হবে। ঘরের আলো স্মার্টফোনের আলোর চেয়ে যেনো কম উজ্জ্বল হয় লক্ষ্য রাখতে হবে। দরকার হলে দু’একটা আলো নিভিয়ে দিতে হবে। তবে একদম অন্ধকার ঘরে স্মার্টফোন ব্যবহার করা অনুচিত।

খোলা জানালা বা চড়া আলো পেছনে না রেখে, যেনো পাশে থাকে, বাঁ-দিকে থাকে, তাহলে বেশি ভালো হয়। না হলে পর্দায় তা প্রতিফলিত হয়ে সমস্যা বাড়ায়। কম্পিউটারে বসলে মনিটর যেনো বিশ থেকে বাইশ ইঞ্চি দূরে চোখের সমান্তরালে দশ ডিগ্রি হেলে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চোখের লেভেল থেকে স্ক্রিন একটু নিচে থাকলেও চোখে কম চাপ পড়ে। তাই এক ফুট দূরে রেখে স্মার্টফোন দেখার অভ্যাস করা দরকার। অর্থাৎ বই পড়ার সময় যে দূরত্ব থাকে সে দূরত্ব থাকা দরকার। আর হ্যাঁ, আধ ঘণ্টার বেশি এক জায়গায় টানা বসে থাকা উচিত নয়।

রাতে ঘুমানোর সময় বিছানায় ফোন রাখবেন না। সকালে ঘুম থেকে উঠেই মেসেঞ্জার বক্স চেক করবেন না। অ্যালার্ম দিয়ে রাখুন গুরুত্বপূর্ণ বার্তা এলে বুঝতে পারবেন। এ জন্য ঘনঘন ফোন দেখার দরকার নেই।

স্মার্টফোনে বেশি সময় কাটালে ক্লান্তি আসা স্বাভাবিক। এ কারণে ক্লান্তি, আসক্তি এবং কুঁড়েমি একত্রে চেপে বসলে স্বাভাবিক জীবনের লক্ষ্যবিন্দু নড়ে যেতে পারে। এ জন্যই বলা হয়, স্মার্টফোন পারিবারিক ও মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ ব্যাহত করছে। তবে এ থেকে বেরিয়ে আসারও উপায় রয়েছে। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে উপায়গুলো আবিষ্কার করেছেন। তারা বলছেন, স্মার্টফোন নির্ভরতা কাটাতে সময় লেগে যেতে পারে প্রায় ছয় মাস। তা লাগুক, কিন্তু শুরু করতে হবে এখন থেকেই। কেননা অতিরিক্ত স্মার্টফোন নির্ভরতা কাটাতে না-পারলে সুস্থ্য স্বাভাবিক জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

লেখক: বিজ্ঞান লেখক গবেষক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button