Government Jobs BDইসলাম শিক্ষাকুরআনের আলো

স্ত্রী কি স্বামীর পাঁজড়ের হাড় দিয়ে তৈরি? এটা কতটুকু সত্য?

Rate this post

স্ত্রী কি স্বামীর পাজড় দিয়ে তৈরি? এটা কতটুকু সত্য?
যদি তাই হয় তবে যেসব নারীর একাধিক বিয়ে হয় বা যেসব পুরুষ একাধিক বিবাহ করে তারা কার পাজড় এর তৈরি?
.
প্রত্যেক স্বামীর পাজড়ের তৈরি নাকি শুধু মা হাওয়া (আ) পিতা আদম (আ) এর পাজড়ের তৈরি?
🔸️উত্তর দিচ্ছিঃ সূরা আন নিসা’র ১নং আয়াতে আল্লাহপাক উল্লেখ করেছেন:
হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী।
আর আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচঞ্ঝা করে থাক এবং আত্নীয় জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর।
নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে সচেতন রয়েছেন।
.
🔹️আবার অন্য এক জায়গায় আল্লাহপাক বলেছেন: তিনিই সে সত্তা যিনি তোমাদিগকে সৃষ্টি করেছেন একটি মাত্র সত্তা থেকে; আর “তার থেকেই তৈরী করেছেন তার জোড়া”, যাতে তার কাছে স্বস্তি পেতে পারে।
অতঃপর পুরুষ যখন নারীকে আবৃত করল, তখন, সে গর্ভবতী হল।
অতি হালকা গর্ভ।
সে তাই নিয়ে চলাফেরা করতে থাকল। তারপর যখন বোঝা হয়ে গেল, তখন উভয়েই আল্লাহকে ডাকল যিনি তাদের পালনকর্তা যে, তুমি যদি আমাদিগকে সুস্থ ও ভাল দান কর তবে আমরা তোমার শুকরিয়া আদায় করব।
(সূরা: আল আ’রাফ | আয়াত: ১৮৯) :
.
🔸️উপরের আয়াত দুটি বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, “তোমাদেরকে/তোমাদিগকে সৃষ্টি করেছেন এক ব্যক্তি থেকে/একটি মাত্র সত্তা থেকে”।
এখানে তোমাদেরকে/তোমাদিগকে বলতে সমগ্র মানবজাতিকে বুঝিয়েছেন। কেবলমাত্র পুরুষজাতিকে নয়।
তাহলে সমগ্র মানবজাতিকে তিনি একটি মাত্র সত্তা বা ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন।
আর “বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী” এই কথাটি দ্বারা তো পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন যে সমগ্র পুরুষ ও নারী সৃষ্টি করে বিস্তার করেছেন অর্থাৎ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি একথা বলেননি যে প্রত্যেক পুরুষ থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন।

কাজেই ধর্মীয় দিক থেকে এব্যাপারটি পরিষ্কার যে আল্লাহ হযরত আদম (আ:) কে সৃষ্টির পর তার পাঁজরের হাড় থেকে হযরত হাওয়া (আ:) কে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের থেকে পর্যায়ক্রমে সকল পুরুষ-নারী সৃষ্টি করে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন।এবার একটি হাদিস শুনি
🔸️আবু হুরায়রা সূত্রে ইমাম বুখারি ও মুসলিম বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
তোমরা নারীদের ব্যাপারে কল্যাণকামী হও, কারণ নারীকে পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
পাঁজরের মধ্যে উপরের হাড্ডি সবচেয়ে বেশী বাঁকা, যদি তা সোজা করতে চাও ভেঙ্গে ফেলবে, ছেড়ে দিলেও তার বক্রতা যাবে না। অতএব নারীদের ব্যাপারে কল্যাণকামী হও।
এখানেও বলা হয়নি যে প্রত্যেক নারী তার স্বামীর পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি।
একটি কথা বলা যায়, যেসব মহিলা তালাক প্রাপ্ত হয়ে বা স্বামী মারা যাওয়ার কারণে অন্য পুরুষের সাথে বিয়ে করেন, তাদের ব্যাপরে কোরআন বা হাদিসে কিছু বলা হয়নি।
তাহলে তারা কিসের থেকে সৃষ্টি বা কতজন পুরুষের পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি?
তাই কোরআন ও হাদিসের আলোকে একথা বলা যায় যে, আল্লাহপাক সর্বপ্রথম হযরত আদম (আ:) কে সৃষ্টি করেছেন।
এরপর তার পাঁজরের হাড় থেকে হযরত হাওয়া (আ:) কে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের দু’জন থেকে পর্যায়ক্রমে সমগ্র মানবজাতি সৃষ্টি করে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে ছিয়েছেন।
প্রত্যেক নারীকে তার স্বামীর (বা পুরুষের) পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করেননি।
পৃথিবীর সব নারীকে তাঁদের স্বামীর পাঁজর থেকে সৃষ্টি করা হয়নি।
বরং শুধুমাত্র হাওয়া আলাইহাস সালামকে আদম আলাইহিস সালামের পাঁজর থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
পৃথিবীতে অনেক নারী আছে যাদের বিবাহ হয় না অর্থাৎ তাদের স্বামী নেই তাহলে তাদেরকে কার পাজর থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে???
🔹️সুতরাং একথা সঠিক নয় যে প্রত্যেক নারীকে তার স্বামীর পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
৩৩৩১. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা নারীদেরকে উত্তম নাসীহাত প্রদান করবে।
কেননা নারী জাতিকে পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
আর পাঁজরের হাড়গুলোর মধ্যে উপরের হাড়টি বেশী বাঁকা।
তুমি যদি তা সোজা করতে যাও, তাহলে তা ভেঙ্গে যাবে আর যদি ছেড়ে দাও, তাহলে সব সময় তা বাঁকাই থাকবে।
কাজেই নারীদেরকে নাসীহাত করতে থাক। (সহীহ বুখারী /৩৩৩১, ৫১৮৪, ৫১৮৬)
(সূত্র আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩০৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩০৯৩)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button