ইসলাম শিক্ষাদাম্পত্য জীবনের ইসলামিক টিপসবিয়ে সমস্যাবোনদের জন্য ইসলাম

ইসলামে বিয়ের নিয়ম ও বিধান-শর্ত – বিবাহের জরুরী বিধান প্রত্যেক পুরুষ এবং মহিলার জানা থাকা জরুরী।

Rate this post

বিবাহের জরুরী বিধান প্রত্যেক পুরুষ এবং মহিলার জানা থাকা জরুরী।
বিবাহ এর সংজ্ঞাঃ
نكح
“নিকাহ” শব্দটি মাসদার বা মূলধাতু এর আভিধানিক অর্থ।
‌> ইমাম ফাররা রহঃ এর মতে সহবাস করা
> ইবনে হাজ্জার আসকালানী রহঃ এর মতে মিলানো বা সংযুক্ত করা।
> কারো কারো মতে বন্ধন।
> কারো কারো মতে এর অর্থ হলো একত্রিত করা।
> আর একদলের মতে ভালো সঙ্গ বিচারের জ্ঞান।
তাহলে বুঝা গেল নিকাহ এর প্রকৃত অর্থ! আবার নিকাহ এর অর্থ কি এ ব্যাপারে ইমামদেও মাঝে মতভেদ আছে। বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে গেলে কি দেখতে হয়
ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর মতে নিকাহ শব্দের হাকিকী তথা আসল অর্থ হলো সহবাস করা এবং রূপক অর্থ হলো বন্ধন।
পারিভাষিক সংজ্ঞাঃ যৌনাঙ্গ উপভোগ করার উদ্দেশ্যে পুরুষ ও নারীর মধ্যে সংঘঠিত বৈধ বন্ধনকে বিবাহ বা নিকাহ বলে।
বিবাহের রুকন ২টিঃ
১. প্রস্তাব
২. সম্মতি
এ প্রস্তাব এবং সম্মতির মাধ্যমে বিবাহ সংঘটিত হয়। স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের মধ্য হতে যে কোন একজন প্রস্তাব করবে। এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে অপরজন বা অপরপক্ষ সম্মতি দিলে বিবাহ সংঘটিত হবে।
শর্ত হচ্ছে,
১. পাত্র-পাত্রী এমন হওয়া চাই যাতে শরিয়াতের পক্ষ থেকে কোন বাঁধা না থাকে। যেমনঃ
ক) মাহরাম না হওয়া।
খ) স্ত্রীর বর্তমানে তার সহোদরা (স্বামী) না থাকা।
গ) কাফির না হওয়া।
২. দুজন স্বাধীন পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুজন নারী উপস্থিত থাকা।
মাহরাম বলতে কি বুঝায়? মাহরাম কারা?
মাহরাম শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো হারাম, যা হালাল এর বিপরিত। আর পারিভাষিক অর্থে মাহরাম বলা হয় যাদেরকে আত্মীয়তা, বা দুধপান করানো, অথবা শাশুরালয়ের সম্পর্কের কারণে বিবাহ করা জায়েয নয়। (লিসানুল আরব খ:৩, পৃ:১৩৯, ফতোয়ায়ে শামী খ:২, পৃ: ১৪৫)
১৪ জন ছাড়া বাকী সবাই “গায়রে মাহরাম” একথার অর্থ হল যে, তাদের বিবাহ করা জায়েয। এবং তাদের সাথে সর্বক্ষেত্রে শরয়ী পর্দার বিধান মেনে চলতে হয়।
এই বিষয়ে পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ “তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতা, তোমাদের কন্যা, তোমাদের বোন, তোমাদের ফুফু, তোমাদের খালা, ভ্রাতৃকণ্যা; ভগিনীকণ্যা তোমাদের সে মাতা, যারা তোমাদেরকে স্তন্যপান করিয়েছে, তোমাদের দুধ-বোন, তোমাদের স্ত্রীদের মাতা, তোমরা যাদের সাথে সহবাস করেছ সে স্ত্রীদের কন্যা যারা তোমাদের লালন-পালনে আছে।
যদি তাদের সাথে সহবাস না করে থাক, তবে এ বিবাহে তোমাদের কোন গোনাহ নেই। তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রী এবং দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা; কিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকরী, দয়ালু। এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে,
শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ।” (সূরা নিসা: ২৩-২৪)
উক্ত আয়াতের ভিত্তিতে পুরুষদের মাহরাম হলো ১৪ জন।
মায়ের মত ৫ জনঃ
১. মা,
২. খালা,
৩. ফুফু,
৪. শাশুড়ি,
৫. দুধ-মা
বোনের মত ৫ জনঃ
১. বোন,
2. দাদি
৩. নানি,
৪. নাতনি,
৫. দুধ-বোন।
মেয়ের মত ৪ জনঃ
১. মেয়ে,
২. ভাই- -এর মেয়ে,
৩. বোনের মেয়ে,
৪. ছেলের বউ।
মহিলাদের মাহরাম ১৪ জনঃ
বাবার মত ৫ জনঃ
(১) বাবা, (২) চাচা, (৩) মামা, (৪) শশুর, (৫) দুধ-বাপ
ভাই-এর মত ৫ জনঃ
(১) ভাই, (২) দাদা,(৩) নানা, (৪) নাতি, (৫) দুধ-ভাই
ছেলের মত ৪ জনঃ
(১) ছেলে, (২) ভাই-এর ছেলে, (৩) বোনের ছেলে,
(৪) মেয়ের জামাই।
এদের সঙ্গে দেখা দেয়া জায়িয। এতদ্ব্যতীত আর কারো সঙ্গে দেখা দেয়া জায়িয নয়। এরা সকলেই মাহরাম, এদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া চিরকালের জন্য হারাম। তাই এদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ, মুখোমুখি কাথা-বার্তা এবং এদেরকে সাথে নিয়ে সফরে বের হওয়া সম্পূর্ণই বৈধ।
সংগৃহীত

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button