দাম্পত্য জীবনের ইসলামিক টিপসনবী-রাসলের জীবনীবোনদের জন্য ইসলাম

ফেসবুকে মেয়েদের ছবি আপলোড করলে কি গুনাহ হবে?

Rate this post

আমার প্রিয় মা – বোনেরা !!
আজ বিজাতীয় সভ্যতার অভিশপ্ত জালে আমরা আবদ্ধ । শয়তানের ধোঁকায় আমরা নানানভাবে জর্জতিত। আর শয়তানের হাজারো ধোকার মধ্যে একটি প্ররোচনা হচ্ছে পর্দার সহিত ফেসবুকে ছবি আপলোড দেওয়া। যা সম্পূর্ণরুপে হারাম।
কিন্তু কখনো কি একটু চিন্তা করে দেখেছি ??
আমাদের মনের সামান্যতম চাহিদা পুরণের জন্য, সামান্য প্রশান্তির জন্য নিজের আমলনামাতে যে সর্বদা গুনাহ লিপিবদ্ধ হচ্ছে তার ব্যপারে আমরা প্রায় সকলেই অজ্ঞাত ।
অথচ নিজের এই নুন্যতম ভালো লাগার বশে গুনাহ করার ব্যপারে আল্লাহ তা’য়ালা সতর্ক করে বলেছেন যে, “ যে দুনিয়ার জিবনকে প্রাধান্য দেয় নিশ্চয়ই জাহান্নাম তার আবাসস্থল হবে। আর যে নিজের রবের সামনে দাড়ানোকে ভয় করে এবং কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজকে বিরত রাখে নিশ্চয়ই জান্নাত তার আবাসস্থল হবে ”(সুরা:নাযিয়াত ৩৮-৪১)
এখানে স্পষ্টভাবে রব্বে কারিম বলেন, যদি তুমি দুনিয়ার জিবনকে প্রাধান্য দাও তাহলে তোমার বাসস্থান হবে জাহান্নাম।
তাহলে বলুন তো, এই যে ফেসবুকে পিক আপলোড দেওয়া এটা কী নিজের নসফকে প্রাধান্য দেওয়া হল না.??
যদি হয়ে থাকে, তাহলে তার বাসস্থান অবশ্যই জাহান্নাম !!
এখন অনেকেই বলবেন আরেহ আমরাতো শরীয়তের বিধান মত পর্দা করে পিক আপলোড দিয়ে থাকি আমাদের হাত,পা, মুখ, শরির কোন কিছুই তো দেখা যায় না, তাহলে এখানে আপলোড নিয়ে আপনাদের শরীর এতো চুলকায় কেনো..??
এখানে আমাদের চুলকায় না বরং আমাদের মা বোনদের এখানে একটু বুঝতে সমস্যা আছে ।
তা হচ্ছে বোরকা পরিধান করলেই কী সকল কিছু করা জায়েয হয়ে যায় ? যেমন: মার্কেটে যাওয়া, ঘুরতে যাওয়া, স্কুল-কলেজে যাওয়া, নন মাহরামের সাথে কথা বলা ইত্যাদি ইত্যাদি সবই কী জায়েয হয়ে যায় নাকি ?
কখনোই নয়, বোরকা পরিধান করে বাহিরে যাওয়ার অনুমতি ঠিক তখনই দেওয়া হয়েছে যখন একটি মেয়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ সামনে আসে যেটা বাহিরে না গেলেই নয় ।
আর উপরোল্লিখিত কোন পন্থার জন্যই ইসলামী শরিয়তে বাহিরে গমন করার বৈধতা নেই ।
অথচ আজ কিছু নারী অপপ্রচার করে থাকে যে, “পর্দা করে চাকরী-বাকরী সকল কিছুই বৈধ “।
ইহা নিতান্তই গর্হিত কথা। কেননা আল্লাহ তা’য়ালা বলেন যে, “ তোমরা নারীরা ঘরের ভিতর অবস্থান করবে, মূর্খতার যুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। ( সুরা আহযাব: ৩৩)
আপনি কী মনে করেন, আপনি বোরকা পরিধান করেছেন তো ব্যস, আপনি স্বাধীন !! আপনি মুক্ত !!
সারা বিশ্ব ঘুরাঘুরি করার জন্য এবং মন যা চায় তাহা করার জন্য সার্টিফিকেট পেয়ে গিয়েছেন ??
আপনি কী কখনো এই কথা চিন্তা করেছেন ?
আপনার হাটার সময় আপনার কোমড় দেখার জন্য লক্ষাধিক যুবক ক্ষুধার্ত বাঘের ন্যায় তাকিয়ে থাকে !!
কখনো কী এটা ভেবে দেখেছেন ?
পর্দার উপর থেকে আপনার শারিরীক অবয়ব দেখে হাজারো যুবক তার নগ্ম মনে আপনার দেহের গঠন আঁকে !!
কখনো কী এ কথা মনে হয়নি ?
আপনার মিষ্টি হাসির সুরে শতাধিক যুবক আপনাকে নিয়ে বাজে গল্প আটে !!
কখনো কি ইহা ভেবেছেন ??
স্রেফ আপনার চক্ষু দেখে লক্ষ লক্ষ যুবক তার পচা, দূর্গন্ধময় অন্তরে আপনার সারা দেহের চামড়া আঁকে !!
শাইখ আলি তানতাবি রহ. বলেছিলেন,
“যুবকেরা তাদের আড্ডায় একটি মেয়েকে নিয়ে যে ধরনের কথা বলে, তা যদি মেয়েটি শুনতে পেত; তাহলে সে ভয়ে চমকে উঠত”।
এখন এরেকটি কথা বলতে পারেন,
কই, আমি তো পর্দা করে কলেজে যাই,
আমি তো পর্দা করে ফেসবুকে পিক আপলোড দেই, আমার তো জোড়ায় জোড়ায় বন্ধু রয়েছে
আদৌ তো আমার কোন ক্ষতি কেউ করলো না,
কোন খারাপ কমেন্ট কোনো পিকে পেলাম না ??
এর উত্তরে বলব,
আলহামদুলিল্লাহ !! বোন; ক্ষতি আজ হচ্ছে না,
তবে কাল যে হবে না তার গ্যারান্টি কে দিল ??
আচ্ছাহ.. কালের ক্ষতি আজ বাদই দিলাম।
আজ যে ক্ষতি হচ্ছে না তাই বা আপনাকে কে বলল ?
আপনার দৈহিক অবয়ব দেখে, আপনার কাজল কালো দু’চোখ দেখে, আপনার মিষ্টি হাসির ধ্বনি শুনে একটি যুবকের অন্তরে ভয়ংকর ক্ষুধার জন্ম নেয় । হয়তো আপনাকে তারা কোন ক্ষতি করেনি। কারন, হতে পারে আপনি কোন ক্ষমতাশীল পরিবারের কন্যা অথবা কোন নেতার কন্যা অথবা কোন প্রতাবশালী পরিবারের মেয়ে ।
কিন্তু আপনাকে দেখে তাদের মনের ক্ষুধা ক্রমশই বাড়তে থাকে যখনই তাদের ক্ষুধার গন্ডি পেরিয়ে যায় তখনই যুবকেরা ডুব দেয় ইন্টারনেটের নিষিদ্ধ সাইটে অথবা তারা যায় কোন নিষিদ্ধ পল্লিতে অথবা রাস্তার পাশে পরে থাকতে দেখা যায় কোন নিষ্পাপ ধর্ষিতা মেয়ের লাশ ।
এই কথা সত্য তা প্রমান করাত জন্য এটাই যথেষ্ট যে আপনি চেয়ে দেখুন আজ অবধি যতগুলো মেয়ে ধর্ষনের শিকার হয়েছে তন্মধ্যে কতজনই বা ধনীর মেয়ে ??
এই সকল গুনাহ কার জন্য হল ? এই গুনাহের পিছনে যার যার কালো হাত রয়েছে তন্মধ্যে আপনিও একজন বিশাল বড় আসামি !!
আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন; “ হাশরের দিন মানুষ এমন সব গুনাহ তাদের আমলনামায় দেখতে পাবে যা তারা ধারনাও করে নি”।
তাই আমার বোনেরা !!
আপনার হাতে পায়ে ধরি, আজই তওবা করুন, বেড়িয়ে আসুন শয়তানের এই সুক্ষ ধোকা থেকে, মুছে ফেলুন আপনার আপলোড করা সকল ছবি।
বিচ্ছিন্ন হয়ে যান ফ্রেন্ড নামক শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে । আজ থেকে যেন আর কোন নন- মাহরাম শুনতে না আপনার মুখের আওয়াজ।
আজ থেকে যেন আর কেহ দেখতে না পায় আপনার শারিরীক অবয়ব । আজই চক্ষুর উপর ফেলে দিন একটি পাতলা কাপড় যাতে করে আর কেহ যেন আপনার দেহের চামড়ার প্রতিচ্ছবি আঁকতে না পারে ৷
পরিশেষে এটাই বলব
“দুনিয়ার কে কি বলল তা কানে কখনো নিবেন না বরং এই দুনিয়াকে যে সৃষ্টি করেছেন তিনি কি বলল তাতে লক্ষ্য করুন” !!
📝circularnews24.com

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button